কী আশ্চর্য শোভা দেখেছি আমি
কর্ণফুলী-বালুচরে দাঁড়িয়ে-
অপূর্ব! অপূর্ব!
বাংলার সুস্পষ্ট পরিতুষ্ট রূপ;
এ বিশ্ব রূপবান ধরা-
আমি ভুলতে পারি না
আমার বাংলার শহর : ছোট ছোট গ্রামপাড়া।
অনেক ঘুরে এসেছি আমি-
সিন্ধুসমুদ্র, যবদ্বীপ, অন্ধ্রপ্রদেশ, মলয়াচল;
কোথাও পাই নি শান্তি-
দেখি নি চিত্তহরণ
এমন নৈপুণ্য স্থান-
ভরানদী, মরাগাঙ, বালুচড়া, শঙ্খখাল;
ধু ধু মাঠ, চলনবিল, ধানখেত, দ্রোণফুল, কাশবন;
লিচুবাগান, পদ্মপুকুর, শাপলাডোবা, শেওলাধাম;
জোনাকির দল, পাখির গান, বলাকার ঝাঁক, বালুকার চর;
ইনানিসৈকত, সদানন্দের মেলা, তারাবিবির হাট;
কাঁচা রাস্তা, নিরালা বটতল, রাখালের খেলা, গরুর পাল;
খেয়াতরী, ছোট ছোট খাল- নদনদী, পানির লহর;
বন্ধুর পথ, অরণ্য-পাহাড়, বনানী-পর্বত;
রাঙামাটির পথ, দিঘি-সরোবর;
পুষ্পমালঞ্চ, মৌচাক, বোলতা, ভিমরুল, মধুকর;
সচ্ছ সলিল, ঝর্ণাছড়ি, শালপিয়ালের বন;
জোছনারাত, হাসির গল্প, আড্ডার আঙিনা;
ঝিঙেতলা, শসাখেত, গরুগাড়ি, মেঠোপথ;
পাহাড়িকা-কন্যা, সাগরিকা-বন্যা, নীহারিকাপুঞ্জ;
বাংলার শোভা কোলাহল গঞ্জ;
শিশিরার্দ্রমাঠ, খেয়াঘাট...
অতঃপর-
যত হোক মাধুর্যে ভরা পৃথিবীর অন্যান্য শহর-বন্দর,
আমি ভুলতে পারি না
আমার ক্ষুদ্র গ্রামপুর : কর্ণফুলী-বালুচর-
তারে ভালবাসি আমি পিতা-পুত্রের মতো
তারে ভালবাসি আমি মাতা-ভগিনীর মতো
তারে ভালবাসি আমি স্ত্রী-প্রেমিকার মতো
তারে ভালবাসি আমি কন্যা-দৌহিত্রীর মতো
তারে ভালবাসি তীর্থ আমার হৃদয়ের মতো
সে আমার মহতী মাতৃধরিত্রী-
আমি তার অপদার্থ পুত্র।
১৫ পৌষ, ১৪০২-
আজমান, আমিরাত।